বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্বাস্থ্য ট্রেন্ডগুলোর মধ্যে একটি হলো ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং। ওজন কমানো, বিপাক ক্রিয়া (metabolism) উন্নত করা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অনেকেই এই পদ্ধতি অনুসরণ করছেন। তবে, এই খাদ্যাভ্যাসে যেমন কিছু উপকারিতা আছে, তেমনি রয়েছে কিছু ঝুঁকিও। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
🔍 ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কী?
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং (Intermittent Fasting বা IF) হলো একটি খাবার গ্রহণের পদ্ধতি, যেখানে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত না খেয়ে থাকা হয়, এবং নির্দিষ্ট একটি সময়সীমার মধ্যে খাবার খাওয়া হয়। এটি কোনো নির্দিষ্ট ডায়েট প্ল্যান নয়, বরং খাবার গ্রহণের সময়সূচি।
সবচেয়ে জনপ্রিয় IF মেথডগুলো হলো:
✅ ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং–এর উপকারিতা
১. ওজন কমানো ও Fat Burn
খাবার খাওয়ার সময়সীমা কমিয়ে ফেলা ও উপবাসের সময় দেহে জমে থাকা ফ্যাট এনার্জি হিসেবে ব্যবহার হয়। এতে ওজন দ্রুত হ্রাস পেতে পারে।
২. ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি
IF দেহের ইনসুলিন লেভেল কমাতে সাহায্য করে, যা টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কার্যকর হতে পারে।
৩. বিপাকীয় স্বাস্থ্য উন্নয়ন
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
৪. সেল রিপেয়ার ও অটোফেজি
উপবাসের সময় দেহ কোষগুলো ‘অটোফেজি’ নামে পরিচিত একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করে। এটি বার্ধক্য বিলম্বিত করতে সহায়ক হতে পারে।
৫. মানসিক স্বচ্ছতা ও ফোকাস
অনেকে বলেন যে উপবাসের সময় মস্তিষ্ক বেশি সচল থাকে এবং মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কের নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর (BDNF) এর মাত্রা বাড়ে।
⚠️ ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং–এর সম্ভাব্য ঝুঁকি
১. হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যাওয়া)
ডায়াবেটিস রোগী বা যারা ইনসুলিন নেন, তাদের জন্য উপবাস বিপজ্জনক হতে পারে। রক্তচাপ ও ব্লাড সুগার কমে যেতে পারে।
২. অতিরিক্ত ক্ষুধা ও অতিভোজন
অনেক সময় উপবাসের পর হঠাৎ বেশি খাওয়া হয়, যা ওজন কমানোর বিপরীত ফল দিতে পারে।
৩. হরমোন ভারসাম্যহীনতা
বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে IF হরমোনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। মাসিক চক্র অনিয়মিত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
৪. মানসিক চাপ ও অস্বস্তি
অনেকের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, মাথা ব্যথা বা দুর্বল লাগতে পারে।
৫. খাবার থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টি না পাওয়া
যদি খাবার গ্রহণের সময়সীমায় সুষম ও পরিমিত খাবার খাওয়া না হয়, তবে শরীর প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল পাবে না।
🧑⚕️ কারা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করবেন না?
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং সবার জন্য উপযুক্ত নয়। নিচের ব্যক্তিরা এই পদ্ধতি অনুসরণ করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন: