হোমস্বাস্থ্যবাংলাদেশে ডায়াবেটিস: কারণ, প্রতিরোধ ও সচেতনতা
বাংলাদেশেডায়াবেটিস: কারণ, প্রতিরোধওসচেতনতা
বর্তমান বিশ্বের অন্যতম স্বাস্থ্য সমস্যা হলো ডায়াবেটিস। বাংলাদেশেও ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের (IDF) মতে, বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটিরও বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত, এবং অগণিত মানুষ না জেনেই এই রোগে ভুগছে। এই নীরব ঘাতক রোধে আমাদের সচেতনতা, জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরি।
ডায়াবেটিসকী?
ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদী (ক্রনিক) রোগ, যেখানে শরীরে ইনসুলিন নামক হরমোনের অভাব বা কার্যক্ষমতার অভাবে রক্তে Glucose এর মাত্রা বেড়ে যায়। সাধারণভাবে ডায়াবেটিসকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়:
টাইপ–১ডায়াবেটিস: ইনসুলিন তৈরি একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।
টাইপ–২ডায়াবেটিস: ইনসুলিন তৈরি হয়, কিন্তু তা যথাযথভাবে কাজ করে না। বাংলাদেশে বেশিরভাগ রোগী টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।
বাংলাদেশেডায়াবেটিসেরপ্রধানকারণসমূহ
অস্বাস্থ্যকরখাদ্যাভ্যাস
উচ্চ চিনি ও ফ্যাটযুক্ত খাবার, সফট ড্রিংকস, ফাস্টফুড ও প্রসেসড খাবারের প্রতি নির্ভরতা বেড়েছে।
শারীরিকপরিশ্রমেরঅভাব
শহরাঞ্চলে অফিসকেন্দ্রিক জীবনযাত্রা, গ্রামাঞ্চলেও মেশিননির্ভরতা বৃদ্ধির কারণে হাঁটা বা ব্যায়াম কমে গেছে।
অতিরিক্তওজন
ওবেসিটি টাইপ-২ ডায়াবেটিসের অন্যতম বড় কারণ।
মানসিকচাপওঅনিয়ন্ত্রিতজীবনযাপন
স্ট্রেস হরমোন Glucose এর মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। চাপযুক্ত জীবনধারা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
পারিবারিকইতিহাসবাবংশগতকারণ
পরিবারের কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে অন্যদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিসেরপ্রাথমিকলক্ষণসমূহ
অতিরিক্ত পিপাসা ও প্রস্রাব
অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগা
ওজন হ্রাস
ক্লান্তি, চোখে ঝাপসা দেখা
ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া
অনেক ক্ষেত্রেই উপসর্গ খুব হালকা বা অনুপস্থিত থাকে, তাই নিয়মিত পরীক্ষা করা জরুরি।
ডায়াবেটিসপ্রতিরোধেকরণীয়
সঠিকখাদ্যাভ্যাসগড়েতোলা
শাকসবজি, আঁশযুক্ত খাবার, ফলমূল, কম চিনি ও কম ফ্যাটযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন।
নিয়মিতব্যায়াম
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি বা হালকা ব্যায়াম ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কার্যকর।
ওজননিয়ন্ত্রণেরাখা
স্বাভাবিক ওজনে থাকা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
ধূমপানওঅ্যালকোহলপরিহার
এগুলো ইনসুলিনের কার্যকারিতা হ্রাস করে এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ায়।
নিয়মিতস্বাস্থ্যপরীক্ষা
৩-৬ মাস পরপর রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করে ঝুঁকি নিরূপণ করা উচিত।
সচেতনতাবৃদ্ধিতেসমাজেরভূমিকা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেস্বাস্থ্যশিক্ষা
শিশু ও তরুণদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
কমিউনিটিভিত্তিকসচেতনতাকর্মসূচি
গ্রামের হাটবাজার বা শহরের ওয়ার্ডে সচেতনতামূলক ক্যাম্প করা যেতে পারে।
মিডিয়াপ্রচারণা
টেলিভিশন, রেডিও, সোশ্যাল মিডিয়াতে ডায়াবেটিস সম্পর্কে তথ্য প্রচার খুবই কার্যকর।
প্রাথমিকচিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতেনিয়মিতডায়াবেটিসপরীক্ষাসুবিধা
যেন কম খরচে সবাই রক্ত পরীক্ষা করতে পারে।