বর্তমান ডিজিটাল যুগে মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। যোগাযোগ, বিনোদন, পড়াশোনা, এমনকি কাজকর্ম—সবকিছুতেই এখন মোবাইলের ব্যবহার। তবে এই প্রযুক্তির উপকারের পাশাপাশি আছে কিছু গোপন ক্ষতিকর দিক, বিশেষ করে যখন এর ব্যবহার মাত্রার বাইরে চলে যায়।
আজ আমরা জানবো, অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ফলে শরীর ও মনের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়ে এবং এর থেকে মুক্তির উপায় কী হতে পারে।
লম্বা সময় ধরে মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখে চাপ পড়ে। এর ফলে হতে পারে—
চোখে পানি পড়া বা শুকিয়ে যাওয়া
ঝাপসা দেখা
মাইগ্রেন বা মাথাব্যথা
“ডিজিটাল আই স্ট্রেইন” সমস্যা
অনেকক্ষণ ধরে নিচু হয়ে মোবাইল ব্যবহার করলে ঘাড়, কাঁধ এবং পিঠে ব্যথা শুরু হয়। এটা ধীরে ধীরে দীর্ঘমেয়াদি “পোস্টারাল” সমস্যায় রূপ নিতে পারে।
রাত জেগে মোবাইল ব্যবহার করলে শরীরের মেলাটোনিন হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। ফলে ঘুম আসতে দেরি হয়, বা ঘুমের গভীরতা কমে যায়। যা পরদিন মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তির অন্যতম কারণ।
দীর্ঘ সময় ধরে টাইপিং বা স্ক্রলিং করতে করতে “টেন্ডোনাইটিস” বা “থাম্ব পেইন” হতে পারে। একে কখনো কখনো “Texting Thumb” বলা হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত সময় কাটানো, তুলনা, লাইক-কমেন্টের চাপে অনেকে মানসিক অস্থিরতায় ভোগে। এতে ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটি দেখা দিতে পারে।
সবসময় নোটিফিকেশন, মেসেজ, ভিডিওর ভিড়ে মনোযোগ বিক্ষিপ্ত হয়। এটি শিশুদের পড়াশোনার ওপর যেমন, বড়দের কাজের দক্ষতার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সঠিক যাচাই-বাছাই ছাড়া যেকোনো তথ্য বিশ্বাস করে মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলে।
মোবাইল ছাড়া অস্বস্তি লাগা, বারবার ফোন চেক করা, কথা বলার সময়ও স্ক্রল করতে থাকা—এসবই মোবাইল অ্যাডিকশনের লক্ষণ। এটি বাস্তব জীবনের সম্পর্ককেও দুর্বল করে।
১. স্ক্রিন টাইম সীমিত করা – প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের বেশি মোবাইল ব্যবহার না করা
২. স্ক্রিন ফ্রি টাইম – ঘুমানোর অন্তত ১ ঘণ্টা আগে থেকে মোবাইল দূরে রাখা
৩. ২০-২০-২০ রুল – প্রতি ২০ মিনিট পর ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরের কিছু দেখা
৪. ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি বাড়ানো – হাঁটা, শরীরচর্চা বা বাইরের কাজকে গুরুত্ব দেওয়া
৫. সোশ্যাল মিডিয়া ডিটক্স – সপ্তাহে ১-২ দিন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার না করা
লেখকঃ তানভীর রহমান ফাহিম