গাঁদা ফুল শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যই নয়, বরং এর ভেষজ গুণের জন্যও সুপরিচিত। গাঁদা ফুল থেকে তৈরি হের্বাল মারিগোল্ড টি (Herbal Marigold Tea) স্বাস্থ্য সচেতনদের মধ্যে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এর বিশেষ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য শরীর ও মনের জন্য উপকারী।
আজ আমরা জেনে নেবো— গাঁদা ফুলের চায়ের উপকারিতা, ঐতিহাসিক ব্যবহার, এবং ঘরে তৈরি করার সহজ উপায়।
প্রাচীন গ্রীক সভ্যতা ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় গাঁদা ফুল ব্যবহার করা হতো মাথাব্যথা, ক্ষত সারানো ও প্রদাহ কমানোর জন্য।
যুদ্ধকালীন সময়েও (আমেরিকান সিভিল ওয়ার, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ) সৈনিকদের ক্ষত সারাতে গাঁদার নির্যাস ব্যবহার করা হতো।
কসমেটিক ও খাবারের প্রাকৃতিক রং হিসেবেও গাঁদার ব্যবহার প্রচলিত ছিল।
গাঁদায় থাকা ট্রাইটারপেনয়েডস প্রদাহ কমায়, ক্ষত দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ব্রণ, একজিমা ও ত্বকের প্রদাহ কমাতে সহায়ক।
কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখে।
পোড়া বা আঘাতের পর টিস্যু পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
গাঁদা ফুলের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিভাইরাল উপাদান কনজাংটিভাইটিস (চোখ লাল হওয়া) ও অন্যান্য চোখের সংক্রমণে আরাম দেয়।
গাঁদা চা দিয়ে গার্গল করলে—
গলা ব্যথা কমে,
দাঁতের মাড়ির প্রদাহ (gingivitis) কমে যায়,
মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।
ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (IBS) ও কোলাইটিস কমায়।
হজম শক্তি বাড়ায়, গ্যাস ও ডায়রিয়া উপশম করে।
১ কাপ গরম পানিতে ২ চা চামচ শুকনো গাঁদা ফুল দিন → ৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন → মধু বা পুদিনা দিয়ে পরিবেশন করুন।
প্রতি কাপ পানিতে ৩টি তাজা ফুল দিন → ৫ মিনিট স্টিপ করুন → মধু মিশিয়ে পান করুন।
গাঁদা ফুল রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন → সকালে ছেঁকে পান করুন।
👉 এটি টোনার, ফেস ওয়াশ বা ক্ষত সারানোর লোশন হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
গাঁদা ফুলের চা শুধু সুস্বাদু পানীয় নয়, বরং এটি একটি প্রাকৃতিক ওষুধি পানীয়। নিয়মিত পান করলে ত্বক উজ্জ্বল রাখে, হজম শক্তি বাড়ায়, প্রদাহ কমায় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করে। তাই প্রতিদিনের রুটিনে গাঁদা চা যুক্ত করতে পারেন নিশ্চিন্তে।