আধুনিক যুগে ভেষজ চিকিৎসার গুরুত্ব

মানব সভ্যতার শুরু থেকেই রোগ নিরাময়ে মানুষ প্রকৃতির ওপর নির্ভর করেছে। গাছপালা, ফল, মূল, পাতা ও বিভিন্ন ভেষজ উপাদান ব্যবহার করে অসংখ্য রোগের চিকিৎসা করা হয়েছে। আজকের আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিকাশ সত্ত্বেও ভেষজ চিকিৎসার গুরুত্ব কমেনি, বরং দিন দিন এটি আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

 

ভেষজ চিকিৎসার ইতিহাস

প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ, গ্রিক-আরব ইউনানি চিকিৎসা ও চীনা হারবাল থেরাপি – সবগুলোর ভিত্তিই ভেষজ উদ্ভিদের ব্যবহার। হাজার বছর ধরে মানুষ রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় ভেষজকে আশ্রয় করে এসেছে। বর্তমানে অনেক আধুনিক ওষুধের মূল উপাদানও ভেষজ থেকে তৈরি (যেমন অ্যাসপিরিন এসেছে উইলো গাছের ছাল থেকে, কুইনিন এসেছে সিনকোনা গাছ থেকে)।

 

আধুনিক যুগে ভেষজ চিকিৎসার গুরুত্ব

১.  প্রাকৃতিক কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত
ভেষজ চিকিৎসা সাধারণত রাসায়নিক ওষুধের তুলনায় শরীরের ওপর কম ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহারে অনেক ক্ষেত্রে এটি নিরাপদ।

২.  ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করা
তুলসী, আদা, হলুদ, রসুনের মতো ভেষজ উপাদান শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যা আধুনিক যুগে বারবার সংক্রমণ ও নতুন রোগ প্রতিরোধে কার্যকর।

৩.  জীবনধারাজনিত রোগ প্রতিরোধে সহায়ক
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, স্থূলতা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে ভেষজ চিকিৎসার ভূমিকা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, করলা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং রসুন কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

৪. কম খরচে সহজলভ্য চিকিৎসা
বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য ভেষজ চিকিৎসা সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী। তাই এটি এখনো সমাজের বড় অংশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
৫. আধুনিক ফার্মাসিউটিক্যাল গবেষণায় ভেষজের ব্যবহার
অনেক ওষুধ কোম্পানি ভেষজ উপাদান থেকে নতুন ওষুধ তৈরি করছে। WHO-ও ভেষজ চিকিৎসার ওপর গবেষণা ও নিরাপদ ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।

সতর্কতা

ভেষজ চিকিৎসা প্রাকৃতিক হলেও সবসময় ঝুঁকিমুক্ত নয়। সঠিক মাত্রা, সঠিক ব্যবহার ও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করলে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তাই ভেষজ চিকিৎসাকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণার আলোকে ব্যবহার করা জরুরি।

bn_BDBengali