ঘুম মানব জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। প্রতিদিনের কাজ, চিন্তা ও দুশ্চিন্তার ভীড়ে আমরা প্রায়ই ঘুমকে অবহেলা করি। অথচ, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য সঠিক সময়ে ও পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। ঘুমের ঘাটতি শুধু ক্লান্তি নয়, নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যারও কারণ হতে পারে।
এই প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করবো—
ঘুমের উপকারিতা
ঘুম না হলে কী হয়
ঘুমের সমস্যা কেন হয়
ঘুম ভালো করার কার্যকর উপায়
ঘুমের সময় মস্তিষ্ক সারাদিনের তথ্যগুলো প্রক্রিয়াজাত করে। পর্যাপ্ত ঘুম মনোযোগ, শেখার ক্ষমতা ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে।
নিয়মিত ঘুম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
ঘুম শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় রাখে, ফলে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ সহজে ঠেকানো যায়।
ঘুমের ঘাটতি হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, যা অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছা বাড়াতে পারে এবং ওজন বৃদ্ধি করতে পারে।
সারাদিন ক্লান্তি ও মনোযোগের অভাব
মাথাব্যথা ও মেজাজ খিটখিটে হওয়া
স্মৃতিভ্রংশ বা ভুলে যাওয়ার প্রবণতা
উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ও হৃদরোগের ঝুঁকি
মানসিক রোগ যেমন ডিপ্রেশন ও অ্যাংজাইটি
মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহারে অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম
দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ বা কাজের চাপ
অনিয়মিত ঘুমানোর রুটিন
চা-কফি বা ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় রাতে পান করা
আরামদায়ক বিছানা বা ঘরের পরিবেশের অভাব
কিছু ওষুধ বা শারীরিক অসুস্থতা
প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং একই সময়ে উঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন—even ছুটির দিনেও।
ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ১ ঘণ্টা আগে মোবাইল, ল্যাপটপ, টিভি বন্ধ করুন। নীল আলো ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন কমিয়ে দেয়।
বিশেষ করে সন্ধ্যার পর চা, কফি, সফট ড্রিংক ইত্যাদি না খাওয়াই ভালো। এতে ঘুম আসতে দেরি হয়।
ঘুমানোর আগে হালকা ধ্যান, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা ধীর গতির মিউজিক শুনে মন শান্ত করা যায়।
ঘর যেন অন্ধকার, নীরব এবং হালকা ঠান্ডা হয়—এতে ঘুম ভালো হয়। ভালো গদি ও বালিশ ব্যবহার করাও জরুরি।
ঘুমানোর আগে কিছু সময় বই পড়া, হালকা লেখা লিখা বা ডায়েরি করার অভ্যাসও ঘুমে সহায়ক হতে পারে।
যদি—
আপনি ২ সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে ঘুমের সমস্যা অনুভব করেন
রাতে ঘুম আসতে দেরি হয় বা মাঝরাতে বারবার জেগে যান
সারাদিন ঘুমঘুম ভাব বা ক্লান্তি থাকে
তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
লেখকঃ তানভীর রহমান ফাহিম